আমি কেন Mac Studio-এর পরিবর্তে MacBook Pro বেছে নিলাম
Mac কেনার ক্ষেত্রে Mac Studio আর MacBook Pro-এই দুই বিকল্পের মধ্যে দ্বিধায় পড়াই স্বাভাবিক। কেউ বলে, “ডেস্কটপে সেরা পারফরম্যান্স পাওয়া যায়” আবার কেউ বলে, “পোর্টেবিলিটি ছাড়া আর কি লাভ?” আমি নিজেও এই দ্বিধায় ছিলাম!
আমি একজন প্রযুক্তিপ্রেমী ও প্রফেশনাল ইউজার। আমার কাজের ধরন এমন যে, আমাকে এক জায়গায় আটকে থাকা চলে না, বাসা থেকে অফিস, মিটিং কিংবা কনফারেন্স থেকে ট্রিপ/ভ্রমন। এসব কাজের জন্য ল্যাপটপই আমার প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু, যখন Mac Studio-এর অসাধারণ পারফরম্যান্সের কথা শুনলাম, তখন মনে হলো, এটাই কি আমার জন্য সেরা অপশন।
তবে কয়েক সপ্তাহ রিসার্চ করার পর এবং বাস্তবে কিছু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে আমি শেষ পর্যন্ত Mac Studio না নিয়ে MacBook Pro বেছে নিলাম। কেন? সেই কারণগুলোই আমি এই ব্লগে শেয়ার করব, যাতে আপনিও আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
প্রয়োজন অনুযায়ী ডিভাইস
Mac Studio আর MacBook Pro- দুটোই শক্তিশালী ডিভাইস, কিন্তু এদের একটি বেছে নিতে হলে প্রথমে নিজের কাজের ধরন বুঝতে হবে। শুধু পারফরম্যান্স ভালো বলেই কোনো ডিভাইস কেনা উচিত নয়, বরং সেটার রিয়েল-লাইফ ইউজ কেস কেমন হবে, সেটাই আসল ব্যাপার।
আমি মূলত কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ইত্যাদি কাজ করি। এসবের জন্য শক্তিশালী প্রসেসিং পাওয়ার দরকার, কিন্তু এর পাশাপাশি আমাকে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েও কাজ করতে হয়। তাই আমার এমন একটি ডিভাইস দরকার যা পারফরম্যান্স + পোর্টেবিলিটি দুটোই দিতে পারবে।
Mac Studio ডেস্কটপ সেটআপের জন্য পারফেক্ট। কিন্তু আমার জন্য সমস্যা হলো, এটি এক জায়গায় বসে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা। আমাকে প্রায়ই ক্লায়েন্ট অফিস বা বাইরে ট্রিপে কাজ করতে হয়, যেখানে ডেস্কটপ নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
অন্যদিকে, MacBook Pro আমার জন্য বেশি সুবিধাজনক। এটি ডেস্কে বসেও ব্যবহার করা যায়, আবার বাইরে নিয়েও কাজ করা যায়। মানে, আমি চাইলে একই মেশিন দিয়ে বাসা, অফিস বা ভ্রমণ সব জায়গায় কাজ করতে পারি।
Mac Studio ও MacBook Pro- দুটোতেই হার্ডওয়্যার আপগ্রেডের অপশন অনেক কম। কিন্তু MacBook Pro বেছে নেওয়ার আরেকটা বড় কারণ হলো এর বিল্ট-ইন ডিসপ্লে, ব্যাটারি এবং কমপ্যাক্ট ডিজাইন। Mac Studio নিলে আমাকে আলাদা মনিটর, কীবোর্ড, UPS, এবং অন্যান্য অ্যাক্সেসরিজ কিনতে হতো, যা একটি বাড়তি খরচ।
Mac Studio বনাম MacBook Pro: সরাসরি তুলনা
Mac Studio এবং MacBook Pro, দুটোই Apple-এর শক্তিশালী ডিভাইস। Mac Studio মূলত একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার, যেখানে আলাদা মনিটর, কীবোর্ড ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ডিভাইস প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, MacBook Pro ল্যাপটপের মতো একটি পোর্টেবল ওয়ার্কস্টেশন। চলুন, বিভিন্ন দিক থেকে এই দুই ডিভাইসের তুলনা করা যাক।
পারফরম্যান্স এবং চিপসেট
Mac Studio এবং MacBook Pro, দুটোতেই Apple-এর শক্তিশালী M সিরিজ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে। Mac Studio-তে রয়েছে M2 Max এবং M2 Ultra চিপসেট, যেখানে M2 Ultra চিপটি Apple-এর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রসেসরগুলোর একটি। এটি বিশেষভাবে 3D রেন্ডারিং, ভিডিও এডিটিং, ডেটা প্রসেসিং এবং অন্যান্য হেভি কম্পিউটেশনাল কাজের জন্য সেরা।
অন্যদিকে, MacBook Pro- তে বর্তমানে M3/4, M3/4 Pro এবং M3/4 Max চিপসেট রয়েছে। এর M4 Max চিপটি অনেক বেশি শক্তিশালী এবং Mac Studio-এর M2 Max- এর প্রায় দ্বিগুণ। তবে M2 Ultra- এর পারফরম্যান্স এখনো MacBook Pro-এর চেয়ে বেশি, বিশেষ করে গেমিং, মেশিন লার্নিং এবং মাল্টি-থ্রেডেড ওয়ার্কলোডে।
পোর্টেবিলিটিতে ল্যাপটপ নাকি ডেস্কটপ?
Mac Studio শুধুমাত্র একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার, অর্থাৎ এটি এক জায়গায় রেখে ব্যবহার করতে হয়। এর জন্য মনিটর, কীবোর্ড, মাউস এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ডিভাইস আলাদাভাবে কিনতে হয়। আপনি যদি কেবল ডেস্কে বসে কাজ করেন এবং পোর্টেবিলিটির প্রয়োজন না হয়, তাহলে Mac Studio একটি দুর্দান্ত চয়েস হতে পারে।
অন্যদিকে, MacBook Pro এমন একটি ডিভাইস যা একই ধরনের হাই এন্ড পারফরম্যান্সের সাথে পোর্টেবিলিটিও অফার করে। MacBook Pro-এর বিল্ট-ইন স্ক্রিন, ব্যাটারি এবং কমপ্যাক্ট ডিজাইন থাকায় আমি যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারি, যা Mac Studio-এর ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
ডিসপ্লে এবং ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্স
Mac Studio-এর সঙ্গে কোনো বিল্ট-ইন ডিসপ্লে নেই, যার মানে আপনি চাইলে Apple Studio Display (27″ 5K) বা অন্য কোনো মনিটর কিনতে হবে। এটি একদিকে সুবিধাজনক, কারণ আপনি নিজের পছন্দমতো ডিসপ্লে বেছে নিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত খরচের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা দরকার।
অন্যদিকে, MacBook Pro-তে Liquid Retina XDR ডিসপ্লে রয়েছে, যা 120Hz ProMotion সাপোর্ট করে এবং কালার এক্যুরেসি, HDR, এবং ব্রাইটনেসের দিক থেকে অসাধারণ। এটি ভিডিও এডিটর, ডিজাইনার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য দারুণ একটি ডিসপ্লে
ব্যাটারি এবং পাওয়ার কনজাম্পশন
Mac Studio একটি ডেস্কটপ মেশিন, তাই এটি পাওয়ার কেবল কানেক্টেড অবস্থায় কাজ করে এবং এতে কোনো ব্যাটারি নেই। যদি বিদ্যুৎ চলে যায়, তাহলে এটি বন্ধ হয়ে যাবে, যা অনেক ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যদিকে, MacBook Pro-তে ২২+ ঘণ্টার ব্যাটারি লাইফ রয়েছে। এটি আমাকে বিদ্যুৎ ছাড়া দীর্ঘক্ষণ কাজ করার সুযোগ দেয়, যা Mac Studio-তে সম্ভব নয়।
কানেক্টরস এবং এক্সপ্যান্ডেবিলিটি
কানেকশন পোর্টের দিক থেকে Mac Studio কিছুটা এগিয়ে। এতে রয়েছে চারটি Thunderbolt 4 পোর্ট, দুইটি USB-A ও USB-C পোর্ট, একটি 3.5 mm headphone jack, HDMI এবং 10Gbps Ethernet পোর্ট।
অন্যদিকে, MacBook Pro-তে তিনটি Thunderbolt 4, একটি HDMI, SD Card Slot এবং 3.5mm হেডফোন জ্যাক রয়েছে। যদিও পোর্ট সংখ্যা কম, তবে এটি বেশিরভাগ কাজের জন্য যথেষ্ট।
কুলিং এবং হিট ম্যানেজমেন্ট
Mac Studio- এর একটি বড় এবং শক্তিশালী কুলিং সিস্টেম রয়েছে। ফলে এটি ওভারহিটিং-এর কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই দীর্ঘ সময় সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স দিতে পারে। এর পাশাপাশি, MacBook Pro-এর কুলিং সিস্টেমও বেশ উন্নত, তবে এটি দীর্ঘ সময় এক্সট্রিম লোডে Mac Studio-এর মতো পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারে না।
দাম এবং ফিউচার আপগ্রেড
দামের দিক থেকে Mac Studio এবং MacBook Pro মোটামুটি কাছাকাছি, তবে Mac Studio নিতে হলে অতিরিক্ত মনিটর, কীবোর্ড, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ডিভাইস কিনতে হবে। ফলে ফাইনাল সেটআপের খরচ MacBook Pro-এর তুলনায় বেশি হতে পারে।
ভবিষ্যৎ আপগ্রেডের ক্ষেত্রে Mac Studio এবং MacBook Pro- দুটোতেই র্যাম ও স্টোরেজ আপগ্রেড করা সম্ভব নয়, কারণ Apple এখন সকল কম্পোনেন্ট সরাসরি চিপের সাথে ইন্টিগ্রেটেড করে দেয়। তাই শুরুতেই যথেষ্ট র্যাম এবং স্টোরেজের অপশন বেছে নেওয়া ভালো।
আরও পড়ুন – MacBook vs Laptop: Which is The Right One for you?
কেন MacBook Pro আমার জন্য সেরা চয়েস হল!
Mac Studio নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী ডেস্কটপ কম্পিউটার, তবে আমার দৈনন্দিন কাজের ধরন অনুযায়ী MacBook Pro অনেক বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি ল্যাপটপ নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্কস্টেশন, যা আমাকে অফিস থেকে শুরু করে কফিশপ, ট্রিপ, এমনকি ক্লায়েন্ট মিটিংয়েও কাজ করার সুবিধা দেয়।
অফিস ও ঘরের বাইরে কাজ করার সুবিধা
আমি কেবল ডেস্কে বসে কাজ করি না, বরং অনেক সময় বাইরে যেতে হয়, ট্রিপে কাজ করতে হয়, এমনকি অফিসের বাইরেও কাজ করতে হয়। Mac Studio-এর মতো ডিভাইস হলে আমাকে সবসময় নির্দিষ্ট একটি জায়গায় বসে কাজ করতে হতো, যা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। MacBook Pro-এর কমপ্যাক্ট ডিজাইন, বিল্ট-ইন কীবোর্ড এবং স্ক্রিন থাকায় যেকোনো জায়গায় সেটআপ করা যায় এবং সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করা যায়।
বিশেষ করে কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটি বিশাল সুবিধা। অনেক সময় ক্লায়েন্ট মিটিং বা আউটডোর শুটিংয়ে যেতে হয়, যেখানে একটি ডেস্কটপ সেটআপ নিয়ে কাজ করা অসম্ভব। MacBook Pro- তে এই সমস্যা নেই, কারণ এটি হালকা ওজনের এবং সহজে বহনযোগ্য।
ব্যাটারি লাইফ এবং অল-ইন-ওয়ান ডিজাইন
Mac Studio একটি ডেস্কটপ, তাই এটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেই চালানো সম্ভব। যদি বিদ্যুৎ চলে যায় বা কোনো জায়গায় পাওয়ার সাপ্লাই না থাকে, তাহলে এটি ব্যবহার করা যাবে না। অন্যদিকে, MacBook Pro-তে ২২+ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ রয়েছে, যা আমাকে বিদ্যুৎ ছাড়াই দীর্ঘক্ষণ কাজ করার সুযোগ দেয়।
তাছাড়া, MacBook Pro একটি অল-ইন-ওয়ান প্যাকেজ। এতে বিল্ট-ইন স্ক্রিন, কীবোর্ড, ট্র্যাকপ্যাড, এবং স্পিকার রয়েছে, ফলে আলাদা কিছু কিনতে হয় না। কিন্তু Mac Studio ব্যবহার করতে গেলে মনিটর, কীবোর্ড, মাউস, এবং স্পিকার আলাদাভাবে কিনতে হবে, যা একদিকে ব্যয়বহুল এবং অন্যদিকে সেটআপে ঝামেলা তৈরি করে।
সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন এবং রিসোর্স ইউটিলাইজেশন
Apple- এর macOS অপ্টিমাইজেশন MacBook Pro- তে অসাধারণ। আমি বেশ কিছু সফটওয়্যার যেমন Final Cut Pro, Logic Pro, Adobe Photoshop, এবং Xcode ব্যবহার করি, যা Apple-এর নিজস্ব হার্ডওয়্যারের সাথে চমৎকারভাবে অপ্টিমাইজড।
Mac Studio-এর M2 Ultra চিপ নিঃসন্দেহে শক্তিশালী, তবে আমার কাজের ধরন অনুযায়ী M3/M4 Max যথেষ্ট পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। বিশেষ করে, আমি যদি ভিডিও এডিটিং, কোডিং, বা ডিজাইনিং করি, তাহলে MacBook Pro অনায়াসেই সেই কাজ করতে পারে এবং এর সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন Mac Studio- এর তুলনায় প্রায় সমানভাবে কাজ করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো থার্মাল ম্যানেজমেন্ট। MacBook Pro- এর নতুন M3 ও M2 সিরিজের চিপসেট অনেক বেশি পাওয়ার-এফিশিয়েন্ট, যার ফলে এটি কম গরম হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলেও কোনো সমস্যা হয় না।
Apple Ecosystem-এর সাথে Seamless Integration
আমি Apple Ecosystem-এর একটি বড় ভক্ত। যদি আপনার কাছে iPhone, iPad, এবং Apple Watch থাকে, তবে MacBook Pro এই ডিভাইসগুলোর সাথে অসাধারণভাবে ইন্টিগ্রেশন করতে সক্ষম।
- Universal Clipboard: iPhone-এ কিছু কপি করলে MacBook Pro-তে সরাসরি পেস্ট করা যায়।
- Handoff: iPhone-এ একটি নোট লেখা শুরু করলে MacBook Pro-তে সেটি কনটিনিউ করা যায়।
- AirDrop: এটির মাধ্যমে সহজেই ফাইল ট্রান্সফার করা যায়।
- Sidecar: iPad কে MacBook Pro এর সেকেন্ড স্ক্রিন হিসেবে ব্যবহার যায়, যা Mac Studio-এর ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
দাম ও ভ্যালু ফর মানি
একটি ডিভাইস কেনার পেছনে শুধু দাম নয়, বরং সেটি দীর্ঘমেয়াদে কতটা কার্যকর হবে সেটাও বিবেচনায় আনা উচিত। Mac Studio এবং MacBook Pro-এর মধ্যে মূল্য ও ভ্যালু ফর মানি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, MacBook Pro বেশি লাভজনক।
আপনিও যদি একটি MacBook Pro কেনার সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে Vertech হতে পারে আপনার গন্তব্য। কারন Vertech আপনাকে দিচ্ছে সেরা দামে, ফাস্ট ডেলিভারি এবং অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি সুবিধাসহ একদম অরিজিনাল MacBook Pro ল্যাপটপ। তাই দেরি না করে চলে আসুন Vertech-এর আউটলেটে অথবা ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করুন আপনার পছন্দের MacBook Pro
Mac Studio + মনিটর + আনুষঙ্গিক ডিভাইস = মোট খরচ
Mac Studio শুধুমাত্র একটি ডেস্কটপ ইউনিট, এতে ডিসপ্লে, কীবোর্ড, মাউস, ওয়েবক্যাম, এবং স্পিকার নেই। ফলে, এটি ব্যবহারযোগ্য করতে হলে আমাকে নিচের আনুষঙ্গিক জিনিসগুলো কিনতে হতোঃ
- Apple Studio Display বা অন্য কোনো 4K/5K মনিটর
- Magic Keyboard এবং Magic Mouse
- একটি ভালো স্পিকার বা হেডফোন
- UPS বা ব্যাকআপ পাওয়ার সাপ্লাই
এই সমস্ত কিছু মোট খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, Mac Studio-এর বেস মডেলের দাম প্রায় BDT 3,00,000, কিন্তু Apple Studio Display যোগ করলে এটি ৪-৫ লাখ টাকার কাছাকাছি চলে যায়। এছাড়া অন্যান্য আনুষঙ্গিক ডিভাইসের দাম যোগ করলে সর্বমোট ব্যয় আরও বেশি হয়ে যায়।
MacBook Pro-এর দীর্ঘমেয়াদি ভ্যালু
অন্যদিকে, MacBook Pro একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার, যার মধ্যে হাই কোয়ালিটির ডিসপ্লে, বিল্ট-ইন কীবোর্ড, টাচপ্যাড, স্পিকার, ব্যাটারি, এবং ক্যামেরা সবই রয়েছে। এর ফলে আলাদা কিছু কিনতে হয় না।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, MacBook Pro-এর ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকায় এটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে, যেখানে Mac Studio-এর ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়া কাজ করা অসম্ভব।
দীর্ঘমেয়াদে কোনটি লাভজনক?
যদি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের কথা ভাবা হয়, তাহলে MacBook Pro-এর ভ্যালু ফর মানি অনেক বেশি। এটি শুধুমাত্র কম দামে পাওয়া যায় তাই নয়, বরং এটি যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করা যায়, এবং এটি বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল নয়।
Mac Studio নিঃসন্দেহে শক্তিশালী, কিন্তু এর সেটআপ সম্পূর্ণ করতে যে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়, তা যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি। এছাড়া, পোর্টেবিলিটির অভাবে এটি দীর্ঘমেয়াদে আমার কাজের জন্য সেরা অপশন ছিল না।
পারফরম্যান্স রিভিউ
MacBook Pro ব্যবহার করে কয়েক মাস পার করার পর বোঝা যায় যে এটি কেবল একটি ল্যাপটপ নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ ওয়ার্কস্টেশন। আমি নিয়মিত কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করি, যেখানে মাল্টিটাস্কিং খুবই জরুরি।
- MacBook Pro-এর পারফরম্যান্স এতটাই স্মুথ যে একসঙ্গে ১০-১৫টি ব্রাউজার ট্যাব, Adobe Photoshop, Final Cut Pro, এবং Xcode চালিয়ে কাজ করা যায়, তবুও কোনো ল্যাগ বা হিটিং ইস্যু হয় না।
- Liquid Retina XDR ডিসপ্লে চোখের জন্য বেশ আরামদায়ক এবং এর কালার অ্যাকুরেসিও অসাধারণ।
- এর SSD স্পিড অত্যন্ত ফাস্ট, ফলে ফাইল ওপেন, সফটওয়্যার লোডিং, এবং রেন্ডারিং টাইম অনেক কম।
কিছু সীমাবদ্ধতা যা লক্ষ্য করেছি
MacBook Pro-তে যথেষ্ট পরিমাণে Thunderbolt 4 পোর্ট, HDMI, এবং SD কার্ড রিডার থাকলেও, USB-A পোর্ট নেই। ফলে পুরনো USB ডিভাইস কানেক্ট করতে আলাদা অ্যাডাপ্টার ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া MacBook Pro-এর RAM ও SSD সোল্ডার্ড থাকায় ভবিষ্যতে আপগ্রেড করা সম্ভব নয়। তাই কিনতে হলে শুরুতেই বেশি RAM ও স্টোরেজ নিতে হয়, যা খরচ কিছুটা বাড়িয়ে দেয়।
উপসংহার
MacBook Pro এবং Mac Studio-এর মধ্যে বেছে নেওয়ার সময় আমি যেসব দিক বিবেচনা করেছি, সেগুলোর ভিত্তিতে আমি নিশ্চিত যে MacBook Pro ছিল আমার জন্য সেরা চয়েস। এটি শুধুমাত্র একটি পোর্টেবল, শক্তিশালী এবং দক্ষ ডিভাইস নয়, বরং আমার প্রয়োজন অনুযায়ী এটি অনেক বেশি কার্যকরী।
MacBook Pro-এর ব্যাটারি লাইফ, পোর্টেবিলিটি, এবং Apple Ecosystem-এর সাথে সিমলেস ইন্টিগ্রেশন আমাকে দারুণ সুবিধা দিয়েছে। অন্যদিকে, Mac Studio শক্তিশালী হলেও এটি পোর্টেবল নয় এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল।
সব মিলিয়ে, MacBook Pro আমার জন্য দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে ভালো ভ্যালু ফর মানি প্রদান করেছে, যা আমার কাজের পরিবেশ এবং প্রয়োজনের সাথে পুরোপুরি মানানসই। যদি আপনি এমন একজন ব্যবহারকারী হন যার পোর্টেবিলিটি, পারফরম্যান্স, এবং ব্যাটারি লাইফ দরকার, তবে নিঃসন্দেহে MacBook Pro হতে পারে আপনার সেরা চয়েস।
Borhan Uddin Alif is a writer with 3 years of experience, focusing on technology, marketing, and storytelling, and enjoys exploring various niches and topics.